হাল ইয়াসতা উইল্লাজিনা লা ইয়া'লামুনা অল্লাজিনা
লা ইয়ালামুন।
যারা জানে আর যারা জানে না উভয় কি সমান? [সুরা যুমার(৩৯)-এর ৯নং আয়াতাংশ]
কুরআনের কাতিব কিংবা ক্যালিগ্রাফাররা কুরআন লিপিবদ্ধ করেন এবং কুরআনের লেখন নীতিমালা(রসমুল কুরআন) এবং বানান নীতিমালা(ইমলাউল কুরআন) শতভাগ অনুসরন করেন। এজন্য তাদের এবিষয়ে নাড়ি-নক্ষত্র জেনে নিতে হয়।
তারা কুরআনের ভাষা শিখে নেন, এরসাথে যে আধ্যাত্মিকতা আছে তা অনুভব করেন। যে কেউ এই বিষয়ে নিজকে সমর্পিত করেন, তিনি এতে হৃদয়ের প্রশান্তির বিষয়টি দেখে অভিভূত হন।
এবার কুরআন কপি বা অনুলিপির ব্যাপারে আসা যাক। এর লেখন নীতিমালা যাকে আরবিতে রসমুল কুরআন বলে। এটা দু'প্রকার।
এক. রসমুল উসমানি
দুই. রসমুল ওরশ
ওসমানী রসমের কুরআন |
এক. রসমুল উসমানি।
আরব বিশ্বের অধিকাংশ দেশসহ পৃথিবীর পূর্ব প্রান্ত পর্যন্ত এ কুরআন পঠিত হয়। এটা রেওয়ায়েত বা বর্ণনা করেছেন হাফস ইবনে সুলাইমান ইবনে আল-মুগিরাহ আল-আসাদিইউ আল কুফি।
এটার তেলাওয়াত বা পঠনরীতি এসেছে আসেম ইবনে আবি আল-নাজুদ আল কুফি আল-তাবেয়ী আন(থেকে) আবি আবদ আল-রহমান আবদুল্লাহ ইবনে হাবিব আল সুলামিইয়ে আন(থেকে) ওসমান ইবনে আফফান ওয়া(এবং) আলী ইবনে আবি তালেব ওয়া(এবং) যায়েদ ইবনে থাবেত ওয়া(এবং) উবাই ইবনে কা'ব আন(থেকে) আল-নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম।
বর্তমান মদিনা কুরআন কমপ্লেক্স থেকে মুদ্রিত ওসমানি রসমের কুরআন পৃথিবীর প্রায় সবখানে পাওয়া যায়। আমার কাছে কয়েকটি কপি আছে বিভিন্ন সময়ে যা ছাপা হয়েছে।
কুরআনের শেষ সুরা নাস। এর পরের পাতা থেকে রেওয়ায়েত, মুসতলাহাত রসমিহ(লেখন পরিভাষা), দবত(সমন্বয়, যা লিখতে আসে পড়তে আসে না এবং হরকত প্রয়োগের বিধিমালা), আদ্দুআয়িহ( সংখ্যা, চিহ্ন বিষয়ক) আলোচনা আছে।
আর আছে আলামাত আল ওক্ফ(যতিচিহ্ন বিষয়ক) আলোচনা এবং কুরআন কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষের ভূমিকা এবং মুদ্রণ সম্পর্কিত তথ্য।
পরের পাতায় ফিহরিস(সুরা সুচী)।
সবশেষে কাতিব বা অনুলিপিকারের নাম এবং লেখার তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে।
ওরশ রসমের কুরআন |
দুই. রসমুল ওরশ।
এই রেওয়ায়েতটি ওরশ আন(থেকে) নাফে' করেছেন। আফ্রিকার পশ্চিম এবং পশ্চিম-উত্তর এলাকার আরব দেশগুলোতে এ কুরআন পঠিত হয়। একে মাগরিবী কুরআনও বলে। এর পঠনরীতি কিছুটা আলাদা। তবে মূল লেখা একই।
অনেকে না জেনে হুট করে বলে বসেন, এই দেখ, কুরআনে কুরআনে কত পার্থক্য! কেউ কেউ নিজের ইচ্ছামত কুরআনের অর্থ করেন! এবং উদ্দেশ্যমূলক বর্ণনা দেন।
৪:১৬০- বস্তুতঃ ইহুদীদের জন্য আমি হারাম করে দিয়েছি বহু পূত-পবিত্র বস্তু
যা তাদের জন্য হালাল ছিল-তাদের পাপের কারণে এবং আল্লাহর পথে অধিক পরিমাণে
বাধা দানের দরুন।
৪:১৬১- আর এ কারণে যে, তারা সুদ গ্রহণ করত, অথচ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং এ কারণে যে, তারা অপরের সম্পদ ভোগ করতো অন্যায় ভাবে। বস্তুত; আমি কাফেরদের জন্য তৈরী করে রেখেছি বেদনাদায়ক আযাব।
৪:১৬২- কিন্তু যারা তাদের মধ্যে জ্ঞানপক্ক ও ঈমানদার, তারা তাও মান্য করে যা আপনার উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আপনার পূর্বে। আর যারা নামাযে অনুবর্তিতা পালনকারী, যারা যাকাত দানকারী এবং যারা আল্লাহ ও কেয়ামতে আস্থাশীল। বস্তুতঃ এমন লোকদেরকে আমি দান করবো মহাপুণ্য।
৪:১৬১- আর এ কারণে যে, তারা সুদ গ্রহণ করত, অথচ এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল এবং এ কারণে যে, তারা অপরের সম্পদ ভোগ করতো অন্যায় ভাবে। বস্তুত; আমি কাফেরদের জন্য তৈরী করে রেখেছি বেদনাদায়ক আযাব।
৪:১৬২- কিন্তু যারা তাদের মধ্যে জ্ঞানপক্ক ও ঈমানদার, তারা তাও মান্য করে যা আপনার উপর অবতীর্ণ হয়েছে এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আপনার পূর্বে। আর যারা নামাযে অনুবর্তিতা পালনকারী, যারা যাকাত দানকারী এবং যারা আল্লাহ ও কেয়ামতে আস্থাশীল। বস্তুতঃ এমন লোকদেরকে আমি দান করবো মহাপুণ্য।
কুরআন মানুষের জন্য অবতীর্ণ হয়েছে। আপনি নিজের বৈশিষ্ট্য এতে খুঁজে পাবেন।
চলবে-
ছবি- নেট থেকে।