রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০১২

মমতা দিদি, বাঙালির হৃদয় ভাঙবেন না!



আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধে ভারত যে সাহায্য-সহায়তা করেছে, তা তুলনাহীন। এজন্য আমার কৃতজ্ঞ। বিশেষকরে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার এবং জনগণের অবদানের কথা আমরা ভুলব না।

দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে নানান অসঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও ভারতের সাথে আমরা সুসম্পর্ক এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। যদিও উজান (ভারত) থেকে আমাদের ন্যায্য পানির হিস্যা আমরা পাচ্ছিনা। দু'দেশের বিশাল বাণিজ্য বৈষম্য বেড়ে চলেছে। কারণে অকারণে নসিয়তও পাচ্ছি। সীমান্ত হত্যা অসহনীয় পর্যায়ে পৌছে যাওয়া সত্ত্বেও ভারতকে আমরা বন্ধু ভাবতে চাই।

আমরা ভারত থেকে সর্দি-কাশির আরাম ফেন্সিডিল পাচ্ছি। গরুখেকো বাঙালির মাংসের জোগান আসছে ভারত থেকে। আনন্দ উৎসবে ভারতীয় নৃত্য-গীত শিল্পীরা এসে মাতিয়ে দিচ্ছেন আমাদেরকে। আমরা তৃপ্ত।

সাংস্কৃতিক বন্ধন বরাবর আমরা দৃঢ় করতে চেয়েছি। এমনকি অসমছালা অনুষ্ঠান দেখা ছাড়া এখন আমাদের রাতের খাবার হজম হচ্ছে না। আমাদের সিনেমা-নাটক কলকাতায় ঠাই না পেলেও আমরা কলকাতার সিনেমা ঢাকার সিনেমাহলগুলোর জন্য উন্মুক্ত করে দিয়েছি। কলকাতার পত্র-পত্রিকা আর সাহিত্যকে আমরা দুহাত বাড়িয়ে গ্রহণ করে চলেছি। আসলে আমরা বন্ধুত্বের বন্ধন দৃঢ় রাখতে চাই।

কিন্তু এখন কেন যেন মনে হচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আমাদের সাথে বন্ধুত্বের সম্পর্ক ফিকে করতে চাচ্ছে। তিস্তার পানি আমাদের ন্যায্য অধিকার। কিন্তু মমতা দিদি বেঁকে বসলেন। আমাদের তরফে বহু রকম নজরানা পেশ করেও তিস্তা চুক্তি হল না। আমাদের মনি আপা কতশত কোশেশ করলেন। কিন্তু মমতা দিদির মন গলাতে পারলেন না।

আজ খবর পেলাম, বাংলাদেশ ও ভারত সীমান্তের বেনাপোল-পেট্রাপোল ‘নো ম্যান্স ল্যান্ডে’ দীর্ঘদিন ধরে হয়ে আসা ভাষা দিবসের যৌথ অনুষ্ঠানটাও মমতা দিদি বন্ধ করে দিয়েছেন।

২১ ফেব্রুয়ারির ওই অনুষ্ঠানে দু’ দেশের শিল্পী ও মানুষের ব্যাপক উপস্থিতিতে সেখানে একটি মিলনমেলার সৃষ্টি হয়ে আসছে।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ‘ভারত-বাংলাদেশ গঙ্গা পদ্মা ভাষা ও মৈত্রী সমিতি’ এই অনুষ্ঠানের আয়োজক এবং দু’ দেশের স্থানীয় প্রশাসন তাতে সহযোগিতা করতো।


পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ও গাইঘাটা এলাকার বিধায়ক ও মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের বাধায় অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

বেনাপোল ও পেট্রাপোল সীমান্তে জিরো পয়েন্টে গত ২০০৫ সাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে মহান একুশে পালনে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। দু’ দেশের ঐতিহ্য , পরম্পরার বার্তাও দেওয়া নেওয়া এই অনুষ্ঠানে।

সীমান্তে জিরো পয়েন্টের এপারে একটি মঞ্চ হয় এবং অন্য প্রান্তে আরেকটি মঞ্চ। পশ্চিমবঙ্গের শিল্পীরা ওপারের মঞ্চে গিয়ে এবং বাংলাদেশের শিল্পীরা ভারতের মঞ্চে এসে গান, নৃত্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করেন।

যৌথ আয়োজক কমিটির সভাপতি ভারতের সাবেক এমপি অমিতাভ নন্দী এবং সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশের এমপি আলহাজ শেখ আফিল উদ্দিন।

আইন-শৃঙ্খলার কথা বলে এটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার।


আমরা জানিনা কেন এসব ব্যাপার ঘটছে। বাংলাদেশের জনগণ বন্ধুত্বে বিশ্বাসী। আশাকরব এসব অস্বস্তিকর ব্যাপার কেটে যাবে এবং আমাদের সম্পর্ক এগিয়ে যাবে।

ছবি- নেট থেকে

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন