বুধবার, ৪ এপ্রিল, ২০১২

জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি এঁকেছিলেন যিনি....




একজন আর্টিস্ট যখন দৃষ্টিপাত করেন, হৃদয়ের জানালা দিয়ে তখন বহুদূর তিনি দেখতে পান। শিল্পী মনের ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলেন শিল্প সুষমা। সৃষ্টির শুভ্র নিটোল আর দীপ্ত আকাশ যেন প্রতিভাত হয় তুলির নিপুন আচড়ে।



বাংলাদেশের একজন নিভৃতচারী শিল্পী সাইফুল ইসলাম। তিনি একান্ত আড়ালে তার শিল্প সাধনা করে চলেছেন। তিনি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে হৃদয়ের মনিকোঠায় প্রগাঢ় ভালবাসায় জড়িয়েছেন। তাই বঙ্গবন্ধুর অনেক পোর্ট্রটসহ লাইফ সাইজ প্রতিকৃতিও এঁকেছেন।

লালনের কুষ্টিয়ায় এই প্রতিভাবান লিজেন্ড শিল্পীর জন্ম ১৯৪৬ সালে। ছোটবেলায় প্রজাপতির ওড়াউড়ি, কাশবনের মাতাল হাওয়া তাকে মগ্নতায় আবিষ্ট করে তোলে। ছবি আঁকার মাঝে তিনি প্রকৃতির সুর খুজতে প্রয়াস পান। মানবের মুখাবয়ব তাকে কৌতুহলী করে তোলে। ধীরে ধীরে তিনি পোর্ট্রেট আঁকায় সিদ্ধহস্ত হয়ে ওঠেন।

১৯৬৯ রাজশাহী বিশ্বিবদ্যালয়ে এম কম পড়ছিলেন। কিন্তু ছবি আঁকার অদম্য ইচ্ছাটাই তাকে ঢাকায় আসতে বাধ্য করে। বছরখানেক চাকুরি করেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু মন মানেনা। চাকরি ছেড়ে পুরোপুরি ছবি আঁকায় মনোনিবেশ করেন।

তার জীবনে অনুপ্রেরণা আর বড় ধরণের পরিবর্তন আসে ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধুর সান্নিধ্যে এসে। একবছরের মধ্যে তিনি বঙ্গবন্ধুর একটি প্রতিকৃতি অঙ্কন করেন।



১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩ সালে দৈনিক বাংলা পত্রিকায় একটি রিপোর্ট ছাপা হয়-


বঙ্গবন্ধু সকাশে শিল্পী সাইফুল ইসলাম

কুষ্টিয়ার প্রতিভাবান শিল্পী জনাব সাইফুল ইসলাম গত শনিবার এক ঘরোয়া পরিবেশে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে শিল্পীর নিজের হাতে আঁকা বঙ্গবন্ধুর এই তৈল চিত্রটি উপহার দেন। ছবিটি আঁকতে শিল্পীর ১৫ দিন সময় লাগে।

জনাব সাইফুল ইসলাম গত ১৯৬৭ সালে কুষ্টিয়া কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রী লাভ করেন। বর্তমানে তিনি ঢাকায় বসবাস করছেন। যে কোন মানুষের তৈল চিত্র অঙ্কনে শিল্পীর একটি স্বকীয় ভঙ্গী আছে।


বঙ্গবন্ধুর স্নেহধন্য এই মহান শিল্পী সারা জীবন ধরে শিল্প চর্চা করেছেন। তিনি বাংলার নিসর্গ এঁকেছেন নিজস্ব রীতিতে। চিরায়ত বাংলার রূপ সৌন্দর্য তার দক্ষ হাতে জীবন্ত হয়ে ওঠে। তিনি শিল্পের টানে রাশিয়া সফর করেছেন। পরে বহু দেশ ভ্রমণ করেছেন তিনি।

তার বিশেষ আগ্রহ ক্যালিগ্রাফি অঙ্কনে। তার অসংখ্য ক্যালিগ্রাফি শিল্পকর্ম দেশে বিদেশে সংগৃহীত হয়েছে। বিশেষ করে বাংলা ক্যালিগ্রাফিকে তিনি নতুন মাত্রা দিয়েছেন। এছাড়া স্টিল লাইফ, ল্যান্ডস্কেপ আর পোর্ট্রেট আঁকায় তার সুখ্যাতি রয়েছে।

এই শিল্পীর বিশাল শিল্পকর্মের ভাণ্ডার সংরক্ষন করা প্রয়োজন।



_______________________________________________________
শিল্পীর কাজগুলো নিয়ে আলাদা লেখার ইচ্ছে আছে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন